সুনামগঞ্জ , বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫ , ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যেন ডোবা-নালা তাহিরপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০ র‌্যাবের অভিযানে ভারতীয় ২৭২ বোতল মদ জব্দ যারা নির্বাচনের বিরোধিতা করছে তারা দেশের শত্রু : কয়ছর এম আহমদ প্রশাসনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা থেকে গায়েব জেলার বহু খাল নির্বাচনের জন্য বিএনপি পুরোপুরি প্রস্তুত : কয়ছর এম আহমদ বিশ্বম্ভরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত শান্তিগঞ্জে ফুটবল খেলা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৪০ দেশ যেন মৌলবাদের অভয়ারণ্য না হয় : তারেক রহমান সত্যশব্দের বর্ষার আয়োজন ‘বাদল গেছে টুটি’ দিরাই থানা ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ইউকের ফ্যামিলি গ্যাদারিং অনুষ্ঠিত জনগণের ভোগান্তি কমিয়ে দ্রুত সেবা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে : কয়ছর এম আহমেদ জামালগঞ্জে উড়ালসড়ক প্রকল্প পরিদর্শনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা তাহিরপুরে তোপের মুখে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শান্তিগঞ্জে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শোভাযাত্রা জাতি-ধর্মে ভেদাভেদ থাকবে না, এই দেশ সবার : সেনাপ্রধান বর্ণাঢ্য আয়োজনে জন্মাষ্টমী উদযাপিত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৬ লেনের কাজ দ্রুত সম্পন্নের দাবি সুনামকণ্ঠ সাহিত্য পরিষদের ‘সাহিত্য আড্ডা’ অনুষ্ঠিত

শান্তিগঞ্জে পলিমাটিতে ভরাট জলমহাল সেচ সংকটে বিপাকে কৃষক

  • আপলোড সময় : ১৭-০২-২০২৫ ০৮:০২:০৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-০২-২০২৫ ০৮:০২:০৬ পূর্বাহ্ন
শান্তিগঞ্জে পলিমাটিতে ভরাট জলমহাল  সেচ সংকটে বিপাকে কৃষক
হোসাইন আহমদ :: শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়নের জীবদাড়া বাজারের দক্ষিণের হাওরের কয়েক শত হেক্টর বোরো জমিতে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। পানির অভাবে ফেটে গেছে ফসলি জমি। এতে বোরো আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। তারা জানান, হাওরের জলমহাল পলিমাটিতে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে স্বল্প সময়ে জলমহালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় জমিতে সেচ করা যাচ্ছে না। স্থানীয় কৃষকরা আরো জানান, সেচের ব্যবস্থা না থাকায় এবং চলতি মৌসুমে হুমকির মুখে পড়েছে কয়েক শত হেক্টর বোরো জমির ফসল। স্থানীয়রা বলছেন, হাওরের জলমহালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় এই হাওরে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। জলমহালগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে খনন না করলে আগামীতে এই হাওরের ফসলি জমিগুলো অনাবাদি হয়ে পড়বে। শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিমুলবাক ইউনিয়নের উকারগাঁও মৌজার এসএ জেল নং-১৪৫, আরএস জেএল নং-০৫, ২৭৬ নং দাগে মোট ১৩.৩০ একর নিয়ে সুরাইয়া বিল জলমহালটি বিদ্যমান রয়েছে। ০৫/০৯/২০২৩ ইং তারিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের ৮৯৪ নং স্মারকে জলমহালটি ১৪৩০-১৪৩২ বাংলা সনের জন্য জীবদাড়া আদর্শ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ ইজারাপ্রাপ্ত হয়েছে। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জীবদাড়া বাজারের দক্ষিণের হাওরজুড়ে কয়েকশত হেক্টর জমিতে বোরো ফসলের মাঠ, সবুজ রঙের ধান গাছগুলো বাতাসে দুল খাচ্ছে। বিস্তীর্ণ হাওরজুড়ে বোরো ফসল রোপণ করেছেন কৃষকরা। তবে জমিতে চরম সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। হাওরের মধ্যখানে ‘সুরাইয়া বিল’ জলমহালটিতে কোন পানি নাই, বিল আর জমি চেনা বড় দায়? বিলটি হাওরের পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। তাই জমি ও জলমহাল একেবারেই সমান্তরাল হয়ে গেছে। কোথাও পানি নেই, যা পানি ছিলো তা, কৃষকরা ব্যবহার করে ফেলেছেন গত কয়েকদিনে। অপরদিকে, সুরাইয়া বিল জলমহালের সমিতির লোকজন কিছু কিছু জায়গায় নিজ উদ্যোগে খনন করে ডোবা তৈরি করছেন, তবে সেটি খুবই সীমিত। জলমহালটির বিগত বছরগুলোতে সমিতির লোকজন যে কয়েকটি ডোবা তৈরি করেছিলেন তার অধিকাংশই ভরাট হয়ে গেছে। আর যেগুলোতে কিছুটা পানি ছিলো সেগুলো একেবারেই শুকিয়ে গেছে। হাওরের কৃষক মো. এনামুল হক জানান, এই হাওরের আমার অনেক জমি আছে। নিজে অনেক ব্যয় করে জমিগুলো চাষাবাদ করেছি। এখন আমাদের হাওরে চরম সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের হাওরের সুরাইয়া বিল জলমহালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় আমাদের এমন দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এই হাওরের কৃষি জমিগুলো বাঁচাতে সুরাইয়া বিল জলমহালটি খনন করতে হবে। বিলের ইজারাদাররাও প্রতি বছর খনন করেন। তবে এটি খুবই সামান্য। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপকভাবে এই জলমহালটি খনন করা হলে, একদিকে কৃষি জমিও বাঁচবে, অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে। জীবদাড়া গ্রামের কৃষক সোহেল মিয়া জানান, জলমহলটি একেবারেই ভরাট হয়ে যাওয়ায় আমাদের জমি আর বিল সমান্তরাল হয়ে গেছে। এইবছর বৃষ্টি না হলে আমাদের রোপণকৃত ফসল ঘরে তোলা অনিশ্চিত। হাওরের এই জলমহালটি খনন করা হলে, আমাদের জমিতে ধান ফলাতে পারবো, না হয় আগামীতে এই হাওরের সব জমিই অনাবাদি থেকে যাবে। গ্রামের লোকজন এই বিলটি ইজারা নিয়েছেন, ভরাট হওয়ার কারণে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিলটি খনন করলে সরকার ও কৃষকের লাভ হবে। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে আর কৃষকরা সোনালী ফসল ফলাতে পারবেন। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, এই জলমহালটি যেন খুব দ্রুত খনন করা হয়। সুরাইয়া বিল জলমাহালের ইজারাদার জীবদাড়া আদর্শ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি সাজিরুল ইসলাম জানান, বোরো মৌসুমের শুরুতেই হাওরের কৃষকরা আমাদের বিলের পানি দিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। কিন্তু জলমহালটি একেবারেই ভরাট হয়ে গেছে। আমরা প্রতি বছরই নিজেদের অর্থে বিলের কিছু কিছু অংশ খনন করে ডোবা তৈরি করি। কিন্তু এটায় কুলায় না। বৃহৎভাবে এই জলমহালটি খনন করা প্রয়োজন। বিলটি ইজারা এনে আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। খনন করলে সরকারেরও রাজস্ব আয় বাড়বে। বিলেও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ থাকবে। কৃষরাও ফসলী জমিতে চাষাবাদ করতে পারবেন। চলতি বছরেও আমরা এই বিলে পানি ধরে রাখার জন্য আমাদের সীমানায় একটি বাঁধ নির্মাণ করছি। সম্পূর্ণ আমাদের টাকায় সেটি বাস্তবায়ন করছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবিব জানান, এই হাওরের আমাদের প্রচুর পরিমাণে বোরো জমি চাষাবাদ হয়েছে। এখান সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটিকে অবহিত করবো, সেই সাথে সেচ সংকট নিরসনের জন্য বিএডিসিকেও অবগত করবো। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অজ্যন করতে হলে নির্বিঘেœ বোরো চাষাবাদ অব্যাহত রাখতে হবে। শান্তিগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সুকান্ত সাহা জানান, বিলটি ভরাট হওয়ার ফলে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ লিখিত আবেদন করেননি। তবে প্রতিটি জলমহালই খনন করা প্রয়োজন। এলাকার লোকজন বিলটি খননের জন্য আবেদন করলে আমরা তা যাচাই-বাছাই করে খননের জন্য অনুমতি দিতে পারবো বা কোন প্রকল্পের মাধ্যমে সেটি খনন করাতে পারবো। সবার আগে আমাদের কৃষিকে বাঁচাতে হবে। সরকারও সেদিকে খুবই আন্তরিক।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যেন ডোবা-নালা

লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যেন ডোবা-নালা